Pages

DSE

Freelancer

Freelance Jobs Freelance Jobs

Wednesday, July 7, 2010

বিটিসিএলের কারও চাকরি যাবে না, সচিবের আশ্বাস

[ শেষেরপাতা ] 2010-07-05

বিটিসিএলের কারও চাকরি যাবে না, সচিবের আশ্বাস

বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কেউই চাকরি হারাবেন না। চলতি মাস থেকে সম্পূর্ণ কোম্পানি আইনে বিটিসিএলের যাত্রা শুরু হয়েছে। নতুন জনবল কাঠামো (অর্গানোগ্রাম) অনুযায়ী আট হাজার ৭০০ তিনটি পদে পুরোনোদেরই নতুন করে নিয়োগ হবে। প্রত্যেকেই কোম্পানির নতুন স্কেলে বেতন পাবেন। ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পছন্দসই কর্মক্ষেত্র বেছে নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে সরকার।
এ মাসেই নতুন জনবলকাঠামো বাস্তবায়নের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বিটিসিএলের চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস। তিনি বলেন, ইচ্ছে করলে সরকারি চাকরি ছেড়ে কোম্পানিতে যোগদান অথবা সরকারি চাকরিতে থেকেই যেতে পারবেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাঁদের পছন্দের ক্ষেত্রে সরকার বা বিটিসিএল কর্তৃপক্ষ কেউ বাধা হবে না।
কীভাবে নিয়োগ বা বিটিসিএলের বর্তমান লোকবল স্থানান্তর হবে জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘যাঁরা সরকারি চাকরি ছেড়ে বিটিসিএলে যোগদান করবেন, তাঁদের জনবলকাঠামো অনুযায়ী বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। এরপর খালি পদে প্রেষণে সরকারি কর্মকর্তাদের পাঠানো হবে। প্রয়োজনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নতুন লোক নিয়োগ দেওয়া হবে।’
জানা গেছে, মন্ত্রণালয়-সৃষ্ট আট হাজার ৭০০ তিন পদের বিপরীতে বর্তমান কর্মরতের সংখ্যা সাড়ে ১৩ হাজার। এর মধ্যে সাড়ে নয় হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী স্থায়ী। আর অস্থায়ী বা মাস্টাররোলে কর্মরত রয়েছেন প্রায় সাড়ে চার হাজার।
২০০৮ সালে বিটিটিবিকে কোম্পানিতে রূপান্তরের সময় তৎকালীন টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ১২ হাজার ৬৩৬ জনকে বিটিসিএলে নেওয়ার জন্য মোট ১২ হাজার ৬৩৬টি সুপারনিউমারি পদ সৃজন করে। এতে বিটিটিবির সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর চাকরির সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছিল। সৃষ্ট সুপারনিউমারি পদের মেয়াদ ছিল দুই বছর, যা শেষ হয়েছে গত ৩০ জুন।
কিন্তু সরকারি চাকরি ছেড়ে কেউ বিটিসিএলে যোগ দিতে না চাইলে কী ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হবে—এ প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে পারেননি বিটিসিএলের চেয়ারম্যান। তবে অস্থায়ী সাড়ে চার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রসঙ্গে সুনীল কান্তি বোস বলেন, ‘ওরা অস্থায়ী হিসেবেই থাকবে। অর্গানোগ্রামের মধ্যে কেউ অবসর গ্রহণ করলে বা চাকরি ছেড়ে দিলে যোগ্যতা অনুযায়ী অস্থায়ীদের ওই সব খালি পদে নিয়োগে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’
সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে যাঁরা থেকে যাবেন, তাঁদের বিষয়ে সচিব বলেন, ভারতে টেলিযোগাযোগ খাতের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বেসরকারি খাতে যাওয়ার পর সরকারি পর্যায়ে ‘ডিপার্টমেন্ট অব টেলিকমিউনিকেশন (ডট) নামে একটি সংস্থা গঠন করা হয়েছে। ওই সংস্থার অধীন সরকারি ও টেলিকম ক্যাডার সার্ভিসের সদস্যরা ভারতের টেলিযোগাযোগ খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশেও এ ধরনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
তবে লোকবল স্থানান্তরের বিষয়টি বেশ জটিল বলে মনে করছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি খুব সহজ নয়। প্রথমে কোনো একটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে আলাদা একটি বিভাগ (ধরা যাক-ডিপার্টমেন্ট অব টেলিকম) করতে হবে। সেটা সংসদে পাস করাতে হবে। তারপর আরও নিয়মতান্ত্রিক জটিলতা তো রয়েছেই।’ চলতি মাসের বাকি তিন সপ্তাহে বিষয়টি সুরাহা করা কঠিন হলেও সবার জন্য ব্যবস্থা হবে বলে মন্ত্রী আশ্বাস দেন।
তবে বিসিএস টেলিকম সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ তালেব বলেন, ‘বিটিসিএলের দুই বছর পূরণ হয়েছে। তাই আইন অনুযায়ী বর্তমান ব্যবস্থায় আমরা সেখানে চাকরি করতে পারব না। সাংগঠনিকভাবে আমাদের সিদ্ধান্ত, সরকারি চাকরি বা ক্যাডার সার্ভিস ছেড়ে বিটিসিএলে যোগ দেব না।’ তবে সরকারি টেলিকম সংস্থায় রেখে বিটিসিএল, টেলিটক বা সরকারি মালিকানাধীন যেকোনো টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠানে প্রেষণে অথবা লিয়েনে নিয়োগ দিলে, তাঁরা সেটাকে অভিনন্দন জানাবে বলে জানিয়েছেন আবু তালেব।
জানা গেছে, বিটিসিএলের নতুন জনবল কাঠামো ইতিমধ্যেই কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নতুন কাঠামো অনুযায়ী, ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অধীনে পাঁচ প্রধান কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। এ পদগুলো হচ্ছে চিফ কমার্শিয়াল অফিসার (সিসিও), চিফ করপোরেট সার্ভিস অপারেটর (সিসিএসও), চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার (সিএফও), চিফ স্ট্যাটেজিক প্ল্যান অফিসার (সিটিপিও) এবং চিফ করপোরেট সার্ভিস অপারেটর (সিসিএসও)।
গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালের ৩০ জুন বাংলাদেশ তার ও টেলিফোন বোর্ডকে (বিটিটিবি) ভেঙে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) এবং বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়। পাবলিক কোম্পানিতে রূপান্তরিত হওয়া বিটিসিএলের ১০০ ভাগ শেয়ারই সরকারের হাতে ছিল। সে সময় বিটিটিবির সব সম্পদ ও জনবলসহ ১৫ হাজার কোটি টাকার (আনুমানিক) মূলধন নিয়ে বিটিসিএল তাদের কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে বিটিসিএলের সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা।

No comments:

Post a Comment