| ||||
উদ্যোক্তাদের কিছুটা ছাড় দিয়ে টেলিযোগাযোগ আইন চূড়ান্ত | ||||
বেসরকারি উদ্যোক্তাদের কিছুটা ছাড় দিয়ে এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) ক্ষমতাহীন করে প্রস্তাবিত টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১০-এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি চার দফা বৈঠক শেষে গতকাল সোমবার এই খসড়া চূড়ান্ত করে। ১১ জুলাই কমিটি প্রতিবেদন আকারে বিলটি সংসদে উপস্থাপন করবে। গতকাল সংসদ ভবনে কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘সরকার, উদ্যোক্তা ও গ্রাহকদের স্বার্থ বিবেচনা করে আমরা ভারসাম্যপূর্ণ একটি সুপারিশ চূড়ান্ত করেছি। কমিটির সব সদস্য ঐকমত্যের ভিত্তিতে এই সুপারিশ চূড়ান্ত করেছেন। তবে এমনটা ভাবা ঠিক হবে না যে আমরা যা চূড়ান্ত করেছি, সংসদ তাই পাস করবে।’ হাসানুল হক ইনু জানান, নিবন্ধন প্রদান, ট্যারিফসহ অন্যান্য চার্জ নির্ধারণের কাজ বিটিআরসিই করবে। তবে এ জন্য তাদের সরকারের কাছ থেকে আগে অনুমোদন নিতে হবে। তিনি দাবি করেন, এতে কারও ক্ষমতা বাড়েনি বা কমেনি। বরং সরকার ও বিটিআরসির ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য আনা হয়েছে। টেলিযোগাযোগ আইনে আগের বিধান অনুযায়ী এসব ক্ষেত্রে বিটিআরসির একক ক্ষমতা ছিল। বেসরকারি উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে জরিমানা আদায়ের ক্ষেত্রেও বিটিআরসির ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী আইন পাস হলে বেসরকারি উদ্যোক্তারা কিছু ছাড় পাবেন। হাসানুল হক ইনু জানান, প্রস্তাবিত আইনে টেলিযোগাযোগ-সংক্রান্ত অপরাধের জন্য আপিলের কোনো সুযোগ ছিল না। কমিটি এ ধরনের অপরাধের জন্য একটি আপিল বোর্ড গঠনের সুপারিশ করেছে। এটি হাইকোর্টের বিচারপতির পদমর্যাদার একজন ব্যক্তিকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট হবে। আপিল বোর্ড কীভাবে পরিচালিত হবে তা সরকার নির্ধারণ করবে। তিনি জানান, টেলিযোগাযোগ-সংক্রান্ত অপরাধের জন্য গ্রেপ্তার করা যাবে। তবে সেই অপরাধ জামিনযোগ্য হবে। প্রস্তাবিত আইনে তাৎক্ষণিক প্রশাসনিক জরিমানার কথা বলা হয়েছে। কমিটি সুপারিশ করেছে, অপরাধের ধরন নির্ধারণ করে জরিমানা করা যাবে, তাৎক্ষণিক নয়। নিবন্ধনের শর্ত পরিবর্তন করতে হলে অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে পরামর্শ করে করতে হবে। কমিটি সরকারকে তাৎক্ষণিক কোনো সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বন্ধ না করার সুপারিশ করেছে। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকের স্বার্থ বিবেচনা করে ওই ধরনের প্রতিষ্ঠানে প্রশাসক নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে। হাসানুল হক আরও জানান, কমিটি চারটি ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০০ কোটি টাকা জরিমানার বিধান করার সুপারিশ করেছে। এগুলো হলো—কেউ নিবন্ধন ছাড়া বেতার যন্ত্রপাতি স্থাপন করে তরঙ্গ (ফ্রিকোয়েন্সি) ব্যবহার করলে, নিবন্ধন শর্ত ভঙ্গ করলে এবং ভুল তথ্য দিয়ে নিবন্ধন সংগ্রহ করলে, চার্জ এড়ানোর জন্য কোনো ধরনের কৌশল অবলম্বন করলে, নিবন্ধিত কোনো নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কোনো বার্তা পরিবর্তন বা বিকৃত করলে এবং টেলিযোগাযোগ ও বেতারযন্ত্র ব্যবহার করে কেউ জাতীয় ঐক্য বা নিরাপত্তা বিনষ্ট করার কাজে লিপ্ত হলে। এ ছাড়া টেলিফোনে আড়িপাতার জন্য সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকা জরিমানার প্রস্তাব বহাল রাখা হয়েছে। কমিটি দেশের পিছিয়ে পড়া এলাকার প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য একটি সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল গঠনের সুপারিশ করেছে। এই তবহিল রাষ্ট্রীয়, আন্তর্জাতিক অনুদান এবং বেসরকারি উদ্যোক্তাদের চাঁদায় পরিচালিত হবে বলে কমিটির সভাপতি জানান। বৈঠকে কমিটির সদস্য ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ, মো. আবদুল কুদ্দুস, সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার, মো. আবদুল ওদুদ, খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী এবং মোয়াজ্জেম হোসেন অংশ নেন। |
Wednesday, July 7, 2010
উদ্যোক্তাদের কিছুটা ছাড় দিয়ে টেলিযোগাযোগ আইন চূড়ান্ত
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment