| ||||
টেলিটকে ভিওআইপির অবৈধ ব্যবসা সবচেয়ে বেশি! | ||||
সজল জাহিদ অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেশনের (ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল-ভিওআইপি) ব্যবসায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হচ্ছে সরকারি মালিকানাধীন টেলিটকের সংযোগ। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবং মোবাইল অপারেটর রবি কার্যালয়ে স্থাপিত দুটি সিম ডিটেকশন বক্স থেকে পাওয়া অবৈধ কল টার্মিনেশনের হিসাবে টেলিটকই রয়েছে শীর্ষে। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে টেলিটক কর্তৃপক্ষ। বরং তারা বলছে, নির্দিষ্ট ওই মেশিনটি বেসরকারি অপারেটররা বসিয়েছে। সে কারণে তাদের ইচ্ছামতো তথ্যই সেখান থেকে আসছে। তবে এ বক্তব্যে বিটিআরসিকে পাশে পাচ্ছে না টেলিটক। বিটিআরসির হিসাবে মধ্য মে থেকে গত ৭ সপ্তাহে টেলিটক সংযোগ ব্যবহার করে ৪০ হাজার ৪৭১ বার অবৈধ কল টার্মিনেশন হয়েছে। এ হিসাবে ভিওআইপির অবৈধ ব্যবসায় ৬৪ শতাংশ ক্ষেত্রে তাদের সিম ব্যবহার করা হয়েছে। অন্যদিকে রবির তালিকা অনুযায়ী টেলিটক দিয়ে অবৈধ কলের ৬৯ শতাংশ এসেছে। প্রথম পাঁচ সপ্তাহ পর্যন্ত এ অবৈধ কল টার্মিনেশনের ৫৯ শতাংশই ছিল টেলিটক সিমের দখলে। সিম ডিটেকশন বক্স দুটি স্থাপনের পর গত সাত সপ্তাহের এ তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রবি এবং বাংলালিংক। ওয়ারিদ রয়েছে তৃতীয় স্থানে। সরকারি ল্যান্ডফোন অপারেটর বিটিসিএল, গ্রামীণফোন এবং সিটিসেল রয়েছে পরের স্থানগুলোতে। তবে অবৈধ কল টার্মিনেশনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অপারেটরের সিম ব্যবহার করা হলেও এক্ষেত্রে ওই অপারেটরগুলো দায়ী নয় বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যামটবের সভাপতি জাকিউল ইসলাম বলেন, অপারেটররা সংযোগ বিক্রি করলেও গ্রাহক সেটি নিয়ে কী করে, তা পাহারা দেওয়া অসম্ভব। সে কারণে অপারেটরদের ওপর দোষ চাপানোও অন্যায়। অভিযোগ থেকে বাঁচতেই পয়সা খরচ করে অপারেটররা বিটিআরসিতে সিম ডিটেকশন বক্স বসিয়েছে। তবে অভিযোগ পাওয়ার পরও টেলিটক কেন ওই সিমগুলো বন্ধ করে দিচ্ছে না, সে বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অ্যামটব সভাপতি। এ বিষয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) জিয়া আহমেদ বলেন, সিম ডিটেকশন বক্স থেকে প্রাপ্ত অবৈধ কাজে ব্যবহৃত নম্বরের তালিকা অপারেটরদের পাঠানো হয়েছে। টেলিটককেও পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে নম্বরগুলো বন্ধ করাসহ সংযোগের বিপরীতে সব তথ্য কমিশনে পাঠাতে বলা হয়েছে। না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। টেলিটকের সংযোগ ব্যবহার করে ভিওআইপির অবৈধ ব্যবসা করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, এটা হতেই পারে না। টেলিটক দিয়ে কম-বেশি অবৈধ ভিওআইপি হতে পারে, তাছাড়া সব অপারেটরের সিম দিয়েই এটা হয়। সে ক্ষেত্রে কেবল টেলিটকের নামে অভিযোগ ভিত্তিহীন। তিনি আরও বলেন, টেলিটকের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দেখা গেছে অবৈধ বৈদেশিক কল আদান-প্রদানে বাংলালিংকের সংযোগ ব্যবহার করা হচ্ছে শতকরা ৮৪ ভাগ। এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন বিটিআরসি এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি। টেলিটকের অপর এক কর্মকর্তা বলেন, তথ্য প্রদানকারী মেশিনটি বসিয়েছে বেসরকারি অপারেটররা। তারাই পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান এমইইউসিসিআইকে খরচ দেয়। ফলে তাদের নির্দেশনায় বেসরকারি অপারেটরদের নম্বর লুকিয়ে সরকারি অপারেটরের নম্বর বেশি দেওয়া হচ্ছে। তাই এ হিসাবের পেছনে তাদের কারসাজি অবশ্যই রয়েছে। তিনি জানান, এ পর্যন্ত ভিওআইপি অভিযোগে দুই হাজার ৮৫২ সংযোগ বন্ধ করা হয়েছে। ভিওআইপির অভিযোগ থেকে মুক্তি পেতে গত ৫ মে দেশের চার মোবাইল অপারেটর (গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, ওয়ারিদ ও সিটিসেল) বিটিআরসি কার্যালয়ে সিমবক্স ডিটেকশন সিস্টেম স্থাপন করে। পরে ১১ মে অপর মোবাইল অপারেটর রবি নিজ কার্যালয়ে আরেকটি যন্ত্র স্থাপন করে। |
Tuesday, July 13, 2010
টেলিটকে ভিওআইপির অবৈধ ব্যবসা সবচেয়ে বেশি!
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment