Pages

DSE

Freelancer

Freelance Jobs Freelance Jobs

Monday, February 21, 2011

আমি বাংলা ভাষা বলছি…..আসুন,আমার বিবর্তন ও সংগ্রামের ইতিহাসের এক ঝলক দেখুন…

আমি বাংলা ভাষা বলছি…..আসুন,আমার বিবর্তন ও সংগ্রামের ইতিহাসের এক ঝলক দেখুন…
আমি (বাংলা ভাষা)..আজ এই টিউনটি ২১ফেব্রুয়ারির ভাষা শহিদের উৎসর্গ করলাম..
আমার জন্ম ভারতীয় আর্য ভাষা থেকে….
আর্য ভাষা তিন ভাগে বিভক্ত
ক/ প্রাচীন ভারতীয় আর্য (১৫০০খ্রীঃ পূঃ – ৬০০ খ্রীঃ পূঃ)
খ/ মধ্য ভারতীয় আর্য (৬০০ খ্রীঃ পূঃ – ৯০০খ্রীঃ)
গ/ নব্য ভারতীয় আর্য (৯০০খ্রীঃ – আজ পর্যন্ত)
এই নব্য ভারতীয় আর্য ভাষা থেকেই আমার (বাংলা ভাষার) জন্ম….
আমার লিপির উদ্ভব কাহিনি…
অশোকের ব্রাহ্মিলিপি দেখুন
নিচে বাংলা অনুবাদ আছে


গুপ্ত শাসনকালে অশোকের ব্রাহ্মিলিপি ভারতের পূর্বাঞ্চলে যে রূপ ধারন করেছিলো তাকে কুটিল লিপি বলে…
ষষ্ঠ শতকের কুটিল লিপি দেখুন
নিচে বাংলা অনুবাদ আছে
এই কুটিল লিপি থেকেই আমার (বাংলা লিপির )উদ্ভব
দ্বাদশ শতকের বাংলা লিপি দেখুন
নিচে বাংলা অনুবাদ আছে
দ্বাদশ শতকেই আমি (বাংলা বর্ণমালা) নিজস্ব রূপ গ্রহণ করেছিলাম …
এবার দেখুন কোন দশকে আমি (বাংলা ভাষা)কেমন ভাবে উচ্চারিত হতাম….
১০ম-১২শ শতকের আমি(বাংলা ভাষা)
উদাঃ- কাআ তরুবর পঞ্চবি ডাল।
চঞ্চল চীএ পইঠা কাল।।…..নমুনাটি ‘চর্যাপদ’ থেকে
১৫শ শতকের আমি (বাংলা ভাষা)
উদাঃ- কে না বাঁশি বাএ বড়ায়ি কালিনী নঈ কুলে।
কে না বাঁশি বাই বড়ায়ি এ গোঠ গোকুলে।।…..নমুনাটি ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ থেকে
১৮শ শতকের আমি (বাংলা ভাষা)
উদাঃ- প্রণমিয়া পাটুনী কহিছে জোড় হাতে।
আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে।।…..নমুনাটি ‘অন্নদামঙ্গল’ থেকে

২০শ শতকের আমি (বাংলা ভাষা)

উদাঃ- রক্ত ঝরাতে পারি না তো একা,
তাই লিখে যাই এ রক্ত-লেখা।…..নমুনাটি ‘আমার কৈফিয়ত’ থেকে
আমার দুটি রূপ আছে..
১/ সাধু ভাষা
২/ কথ্য ভাষা বা উপভাষা
এই উপভাষা দিয়েই একটি বিশেষ অঞ্চলের মানুষকে পৃথক করা যায়।
আপনি দেখে নিন ….আপনার উপভাষা অঞ্চল কোনটা….
এই উপভাষার ৫টি ভাগ….
ক/ রাঢী– যে অঞ্চলে উচ্চারিত হয় (বর্ধমান,হাওড়া,হুগলী,বীর‍ভূম,বাঁকুড়া পূর্ব,কলকাতা,নদীয়া,২৪পরগনা,মুশিদাবাদ)
খ/ ঝাড়খণ্ডী–যে অঞ্চলে উচ্চারিত হয়(মেদিনীপুর,পুরুলিয়া,বাঁকুড়া পশ্চিম,সিংভূম)
গ/ বরেন্দ্রী–যে অঞ্চলে উচ্চারিত হয় (মালদহ,দিনাজপুর,রাজশাহী,পাবনা,বগুড়া)
ঘ/ বঙ্গালী–যে অঞ্চলে উচ্চারিত হয়(ঢাকা,ময়মনসিংহ,বরিশাল,ফরিদপুর,যশোহর,খুলনা,নোয়াখালি,কুমিল্ল)
ঙ/ কামরূপী–যে অঞ্চলে উচ্চারিত হয়(জলপাইগুড়ি,কোচবিহার,দাজিলিং,শ্রীহট্ট,কাছাড়,রংপুর,এিপুরা)
এবার আমরা এই সব ভাষার উদাহরণ দেখবো……
ক/ রাঢী–হতভাগা ছেলে তোকে কখন থেকে বলছি–গাইটা দুইয়ে দিয়ে বাজারে যা। তা ছেলের কথা শোনো,
বলে কিনা,শীত করছে। ঘাড়টা ধরে নিয়ে আসবো। মারবো গালে চড়।
খ/ ঝাড়খণ্ডী–অ দিদি,চিনাই দে ন বটে লকটি । অ বিষ্টুপুরের হলদ মাখ্যে গা করেছে আল। অ বহিন,
নামহ কুলহিতে মাদল বাজে।পান চিবাঁই চিবাঁই উটা ঘুর‍্যেঁ মরছে ভাল।
গ/ বরেন্দ্রী–হতভাগা ছুয়া,হামি এ্যাকনা গরুডা দুহায় লিয়ে হাটত যা। উকি শুনহে? উ কহছে,বডা জার লাগছে।
গর্দানটা ধর‍্যা ওয়াক লিয়ে আয়। গালত চর ঠাটামু।
ঘ/ বঙ্গালী–ছাইক্‌কপাইলা পোলারে। কি আর কমু? কোন্ হাত হাকালে কইচি — গরুডারে পানাইয়া বাজারে যা। এমুন পোলা। তা নি কথা হোনে?
কয় হীতে ধরেচে।দ্যাক,ঘাড্‌ডা ধইরা লৈয়া আমু, মারুম গালে থাপর।
ঙ/ কামরূপী–তুই কোটে যাইস?মুই কইল্‌কাতা যাবার ধরিচং। কইল্‌কাতা এক আজর শহর।

এবার আমি (বাংলা ভাষা)কি ভাবে উচ্চারিত হই…..

আমি(বাংলা ভাষা)মানুষের বাকযন্ত্রের মাধ্যমে উচ্চারিত হই….
কিন্তু মানব শরীরে বাগযন্ত্র বলে কোন আলাদা অঙ্গ নেই….
বাগযন্ত্রের ছবি দেখুন….হাতে আঁকা..


ফুসফুস প্রথম বায়ুটেনে নেয়…ও বায়ু বের করে দেয়…আর সেই বায়ু মুখগহ্বর দিয়ে বেরুবার সময় ঠোঁট,জিভ,দাঁত,তালু প্রভিতিতে বাঁধাপ্রাপ্ত হয়ে ধ্বনি বা বাক বা কথার সৃষ্টি করে।
ধ্বনি প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়…
১/স্বরধ্বনি
২/ব্যঞ্জনধ্বনি
১/স্বরধ্বনি
ফুসফুস থেকে বায়ু মুখগহ্বর দিয়ে বের হবার সময় কোন রূপ বাঁধাপ্রাপ্ত হয় না তখন তাকে স্বরধ্বনি বলে
যেমন…নিজে উচ্চারণ করে দেখুন..অ আ ই ঈ….ইত্যাদি .বায়ু কতো সোজা সুন্দর বের হয়ে যাচ্ছে।
২/ব্যঞ্জনধ্বনি
ফুসফুস থেকে বায়ু মুখগহ্বর দিয়ে বের হবার সময় কোন রূপ বাঁধাপ্রাপ্ত হয় তখন তাকে ব্যঞ্জনধ্বনি বলে
মোট ৩৬টি ব্যঞ্জনধ্বনি আছে।
যেমন- ক খ গ….
……..এই পথেই আমি বির্বতিত হয়েছি….

*******এবার আমার সংগ্রামের পথ……..
তখন অখণ্ড ভারত প্রথম দুটি ভাগে বিভক্ত ভারত ও পাকিস্তান..মূলত ধর্মের দিক থেকে
পাকিস্তান দুটি অংশ…পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান
পূর্ব পাকিস্তানই অধুনা বাংলাদেশ….
পশ্চিম পাকিস্তান গায়ের জোরে উর্দু ভাষাকে অধুন বাংলাদেশের রাষ্ট্রিয় ভাষা করতে চাইলো…
সেই থেকে সংগ্রামের পথ চলা শুরু——-
বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১৯৫২-র ২১শে ফেব্রুয়ারি …….
সমস্ত বাংলা দেশ জুড়ে মাতৃভাষার পক্ষে সরব হচ্ছে বাংলাদেশবাসী…..
ঢাকা মেডিকেল কলেজের সম্মুখের রাস্তায় ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে
on 21 february 1952 আমি বাংলা ভাষা বলছি.....আসুন,আমার বিবর্তন ও সংগ্রামের ইতিহাসের এক ঝলক দেখুন... | Techtunes
সবাই জড়ো হলেন বিক্ষোভের জন্য
langmvt আমি বাংলা ভাষা বলছি.....আসুন,আমার বিবর্তন ও সংগ্রামের ইতিহাসের এক ঝলক দেখুন... | Techtunes
১৪৪ ধারা ভেঙ্গে বিক্ষোভ প্রদর্শনরত হতে লাগলো…….
11 03 1948 আমি বাংলা ভাষা বলছি.....আসুন,আমার বিবর্তন ও সংগ্রামের ইতিহাসের এক ঝলক দেখুন... | Techtunes
অবশেষে ছাত্র-জনতার উপর পুলিশ এলোপাথারি গুলি চালালো……..
মাটিতে লুটিয়ে পড়লো অগনিত জনতা….যখম হলো বহু…..
মাতৃভাষার দাবি তে শহিদ হলেন…
রফিক,আব্দুস সালাম,বরকত, জব্বার,আবদুল আওল,ওহি উল্লাহ, এবং আরও অনেকে
 আমি বাংলা ভাষা বলছি.....আসুন,আমার বিবর্তন ও সংগ্রামের ইতিহাসের এক ঝলক দেখুন... | Techtunes
ইনি…রাফিকুদ্দিন আহমেদ
বাংলা ভাষা আন্দলনের প্রথম শহিদ হিসাবে ধরা হয়। ১৯২৬ সালের ৩০ অক্টোবর জন্মগ্রহন করেন।
পিতা- আব্দুল লতিফ মিয়া, মাতা- রাফিজা খাতুন।
মৃত্যু ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি…ঘটনাস্থলে
 আমি বাংলা ভাষা বলছি.....আসুন,আমার বিবর্তন ও সংগ্রামের ইতিহাসের এক ঝলক দেখুন... | Techtunes
ইনি…সফিউর রহমন
জন্ম-১৯১৮
মৃত্যু-২১ ফেব্রুয়ারি,১৯৫২সালে ঘটনাস্থলে
 আমি বাংলা ভাষা বলছি.....আসুন,আমার বিবর্তন ও সংগ্রামের ইতিহাসের এক ঝলক দেখুন... | Techtunes
ইনি…আব্দুস সালাম

জন্ম- ১৯২৫
গুলিতে আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন….
মৃত্যু- ১৯৫২ সালের ৭ই এপ্রিল
 আমি বাংলা ভাষা বলছি.....আসুন,আমার বিবর্তন ও সংগ্রামের ইতিহাসের এক ঝলক দেখুন... | Techtunes
ইনি…আব্দুল জাব্বার
জন্ম-১৯১৯ সালের ১১ অক্টোবর। পিতা-হাসান আলি ও মাতা-সাফাতুন নেসা।
মৃত্যু-১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি,ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে…
abul barkat আমি বাংলা ভাষা বলছি.....আসুন,আমার বিবর্তন ও সংগ্রামের ইতিহাসের এক ঝলক দেখুন... | Techtunes
ইনি…আবুল বরকত
জন্ম ১৯২৭সালে ১৬ জানুয়ারি।
মৃত্যু ২১ ফেব্রুয়ারি,১৯৫২ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে…রাত ৮টায়
পরের ছবিটি ক্রন্দন রত বরকতের পিতা মাতা….
5 আমি বাংলা ভাষা বলছি.....আসুন,আমার বিবর্তন ও সংগ্রামের ইতিহাসের এক ঝলক দেখুন... | Techtunes
বরকতের শেষ উক্তি…“গুলি লেগেছে,বড় ঠাণ্ডা লাগছে…..”
পরের দিন নিস্তব্ধ ঢাকা ইউনিভাসিটি….
amtala আমি বাংলা ভাষা বলছি.....আসুন,আমার বিবর্তন ও সংগ্রামের ইতিহাসের এক ঝলক দেখুন... | Techtunes
আমতলা,আর্টস বিল্ডিং,ঢাকা ইউনিভাসিটি
২১ ও ২২শে ফেব্রুয়ারি১৯৫২ সালে ঢাকার রাজপথে অগণিত জনতার স্বতঃস্ফুর্ত সমাবেশের চি্ত্র দেখুন
image 84 33605 আমি বাংলা ভাষা বলছি.....আসুন,আমার বিবর্তন ও সংগ্রামের ইতিহাসের এক ঝলক দেখুন... | Techtunes
প্রথম ভাষা শহিদ মিনার ২৪শে ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ সালে সম্পূর্ণ হয়,
এটি তৈরী হবার ৭২ঘন্টার মধ্যেই পাকিস্তানি পুলিস ভেঙে মাটিতে মিশিয়ে দেয়….
আমি(বাংলা ভাষা)তোমাদের (ভাষা শহিদদের)সেলাম জানাই….
দূর্গম গিরি তোমরাই জয় করে দেখিয়েছো…সাবাশ…মাতৃভাষার হোক জয়…
অবশেষে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ….
একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়
ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে……
 আমি বাংলা ভাষা বলছি.....আসুন,আমার বিবর্তন ও সংগ্রামের ইতিহাসের এক ঝলক দেখুন... | Techtunes
অবশেষে মাতৃভাষা শহিদরা সমগ্র পৃথিবী জুড়ে মানব হৃদয়ে স্থান করে নিলো…….আমার (বাংলা ভাষার)আত্মা পেলো শান্তি…
শত শহিদের রক্ত রাঙানো আমার (বাংলা ভাষার)এই জীবন…….
এতো সংগ্রামের পথ ধরে আমি আজ মুক্ত…..
সত্যিই কি মুক্ত…?

আয় তোরা দেখে যা…..
আমি (বাংলা ভাষা)উন্মুক্ত হই অভ্রের হাত ধরে….
avro5 splash আমি বাংলা ভাষা বলছি.....আসুন,আমার বিবর্তন ও সংগ্রামের ইতিহাসের এক ঝলক দেখুন... | Techtunes
তাই মেহেদী হাসান খান,আমার(বাংলা ভাষার)তরফ থেকে তোমাকে জানাই বিনম্র ভালোবাসা …
হ্যাঁ.. আমি(বাংলা ভাষা)আপনাকে তুমি করেই বললাম…আর আপন মানুষকে তো তুমি করেই বলতে হয়….
আর একটা অনুরোধ আছে...পরের বছর ২১ফেব্রুয়ারি মধ্যে আমি অভ্র spell checker কে পৃথিবীর বৃহত্তম বাংলা বানান অভিধান হিসাবে দেখতে চাই

যদি কেউ অভ্র ৫.১.০ ডাউনলোড করতে চান…..তাহলে এখান থেকে ডাউনলোড করুন

“আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙালো একুশে ফব্রুয়ারী
আমি কি ভুলিতে পারি…
ছেলে হারা শত মায়ের অশ্রু-গড়া এ ফেব্রুয়ারী
আমি কি ভুলিতে পারি…
আমার সোনার দেশের রক্তে রাঙানো ফেব্রুয়ারী
আমি কি ভুলিতে পারি।।”
ekushe2 আমি বাংলা ভাষা বলছি.....আসুন,আমার বিবর্তন ও সংগ্রামের ইতিহাসের এক ঝলক দেখুন... | Techtunes

No comments:

Post a Comment