অ্যাপলের আইপ্যাড বাজারে আসার দিন ঘনিয়ে আসার কল্যাণেই সম্প্রতি টেক বিশ্বে এ নিয়ে আলোড়নই তৈরি হয়েছে। আইপ্যাডের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দিতায় আসতে পারে এমন কিছু ট্যাবলেট কম্পিউটারও বাজারের দখলনিতে মাঠে নামতে পারে বলেই মনে করছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা। ফলে, স্লেট ও ট্যাবলেট পিসির দামামায় বছরটি বেশ জমজমাটই থাকবে বলেই মনে হচ্ছে। খবর ইয়াহু অনলাইনের।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, টেক বিশ্বে যেসব কারণে আইপ্যাড জনপ্রিয় হতে পারে তার মধ্যে রয়েছে এর হাই-প্রোফাইল বিশেষত্ব। পাশাপাশি বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনের সমন্বয় এবং সঙ্গে বিখ্যাত অ্যাপলের ব্র্যান্ড তো আছেই। এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে অন্যান্য কোম্পানিগুলোও কিন্তু পিছিয়ে নেই। জানা গেছে, আগামী দিনগুলোতে আইপ্যাডের প্রতিদ্বন্দী হতে পারে এমনই ১২ টি ট্যাবলেট পিসি নিয়ে আসছে বিভিন্ন কোম্পানি।
দ্যা জুজু
লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমনির্ভর জুজু আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারে আসে ২০০৯ সালে। এটি ‘ক্রাঞ্চপ্যাড’ নামেই বেশি পরিচিত। এতে আছে একটি বাটন এবং ১২.১ ইঞ্চির টাচ স্ক্রিন পর্দা। দ্রুত চালু হতে পারে এবং ৯ সেকেন্ডের মধ্যেই ইন্টারনেট সংযোগ পেতে সক্ষম এই জুজু। এতে আছে সম্পূর্ণ হাই ডেফিনিশন ভিডিও, ভার্চুয়াল কিবোর্ড যাতে একহাতেই টাইপ করা যায়। এছাড়াও টাচ নেভিগেশনের সাহায্যে ওয়েব ব্রাউজিং সুবিধাও আছে। ৪ গিগাবাইট সলিড স্টেট ড্রাইভের এই ডিভাইসটি একবার ব্যাটারি চার্জে ৫ ঘন্টা পর্যন্ত চলে।
এইচপি স্লেট
২০১০ সালে কনজিউমার ইলেকট্রনিক্স শোতে এইচপি আইপ্যাড ধরনের একটি প্রোটোটাইপ দেখানো হয়েছিলো। এই সেøট চলে উইন্ডোজ ৭ অপারেটিং সিস্টেমে। এতে রয়েছে একটি ওয়েবক্যাম এবং ইউএসবি পোর্ট। পাশাপাশি পিসির জন্য কিন্ডল অ্যাপ্লিকেশন এবং অন্যান্য ভিডিও ফাংশনও আছে। টাচ স্ক্রিন সুবিধার এই সেøট এর দাম ৫৫০ ডলার। এ বছর শেষের দিকে বাজারে আসতে পারে এইচপির সেøট।
এক্সপো পিসি স্লেট
এক্সপো পিসি স্লেট হলো উইন্ডোজ নির্ভর ট্যাবলেট যেখানে ওয়েব ব্রাউজিং ছাড়াও টেলিভিশন ও মুভি দেখা যায়। এখানে বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনের পাশাপাশি পড়া যায় ই-বুকও। ৮.৯ ইঞ্চি টাচস্ক্রিন বিশিষ্ট এক্সপো পিসি স্লেটে আছে হাই ডেফিনিশন রেজুলিউশন, আছে ৩২ গিগাবাইট হার্ডড্রাইভ এবং ওয়েবক্যামও। জানা গেছে, এক্সপো পিসির দাম পড়তে পারে ৫৯৯ ডলার।
আইসিডি ভেগা
আইপ্যাডের প্রতিদ্বন্দী হতে পারে এমনই আরেকটি পিসির নাম ভেগা। এর ঘোষণা দেয়া হয়েছিলো ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে। জানা গেছে, এটি বাজারে আসতে পারে এ বছরই। ইনোভেটিভ কনভার্জড ডিভাইসে তৈরি ভেগাতে চালানো যাবে অ্যান্ড্রয়েড ২.০ অপারেটিং সিস্টেম। এতে থাকছে ১৫.৬ ইঞ্চি টাচস্ক্রিন। এটি ছাড়াও ২টি ছোট সাইজেও ভেগা সেøট বাজারে পাওয়া যাবে। এতে আছে ৩২ গিগাবাইট ইন্টারনাল এসডি স্টোরেজ, একটি রিমুভেবল চার্জিং স্ট্যান্ড। ভেগায় চলবে ওয়েব টিভিও।
ভিলিভ এক্স ৭০
উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম নির্ভর, ৬০ গিগাবাইট স্টোরেজ ক্ষমতাসহ ভিলিভ এক্স ৭০ নামের এই ডিভাইসে থাকছে ৭ ইঞ্চির ডিসপ্লে। এছাড়াও থাকছে ফাশ সাপোর্ট, ডিজিটাল ক্যামেরা, জিপিএস, থ্রিজি এবং বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনও। একবার পুরো চার্জে ৬ ঘন্টার ভিডিও ব্যাকআপ দিতে পারে এটি। দাম ৫৯৭ ডলার।
প্লাস্টিক লজিক কিউইউই প্রো রিডার
প্লাস্টিক লজিকের তৈরি কিউইউই প্রো রিডার ব্যবসায়ীদের প্রয়োজন ছাড়াও ই-রিডার হিসেবেও কাজ করতে পারে। এটি পাওয়া যায় ২ টি মডেলে। দাম ৬৪৯ এবং ৭৯৯ ডলার। এতে আছে সাড়ে ৮ ইঞ্চি বাই ১১ ইঞ্চি ডিসপ্লে এবং ওয়াইফাই সংযোগ। এটি ১/৩ ইঞ্চি পুরু এবং টাচ স্ক্রিন সম্পন্ন। কিউইউই প্রো রিডার বাজারে আসতে পারে চলতি মাসেই।
আর্কোস ৯
আর্কোস ৯ ট্যাবলেট চলে উইন্ডোজ ৭ অপারেটিং সিস্টেমে। আর্কোস ৯ এ আছে ৮.৯ ইঞ্চি টাচ স্ক্রিন, আছে ১০৮০ পিক্সেল হাই ডেফিনিশন রেজুলিউশন এবং ৬০ গিগাবাইট হার্ডড্রাইভ। অনেকগুলো মাল্টিমিডিয়া ফাংশনেই এতে কাজ করা যায়। ইন্টারনেটে গান শোনা, ইন্টারনেট রেডিও এবং ভিডিও চ্যাটিং সুবিধাও আছে এই আর্কোস ৯ ট্যাবলেট এ। আর্কোস ৫ ও ৭ এর সঙ্গে নতুন পণ্য হিসেবেই আর্কোস ৯ যুক্ত হচ্ছে।
ডেল স্ট্রেক
৫ ইঞ্চি টাচস্ক্রিনের ডেল স্ট্রেক ট্যাবলেট আইপ্যাডের ঘনিষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। এটি চলে অ্যান্ড্রয়েড ২.০ অপারেটিং সিস্টেমে। এতে আছে ২টি ক্যামেরা। একটি ৫ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা এবং ভিডিও চ্যাটিং এর জন্য আলাদা আরেকটি ক্যামেরা। এতে আমাজন কিন্ডল স্টোর ছাড়াও অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন স্টোরের অ্যাকসেসও পাওয়া যাবে।
অ্যাক্সিওট্রন মডবুক
অ্যাক্সিওট্রন মডবুকে ব্যবহার করা হয়েছে এক্সিওট্রনের টাচ স্ক্রিন এবং ট্যাবলেট প্রযুক্তি। আর এতে ব্যবহার করা হয়েছে ম্যাকবুকের সব হার্ডওয়্যারই। এটি অ্যাপলের অপারেটিং সিস্টেমে চলবে এবং একে সম্পূর্ণ ট্যাবলেট কম্পিউটারেও রূপান্তর করা যাবে। ব্যবহারকারি চাইলে তার ম্যকবুক ল্যাপটপটিকে সাড়ে ৮০০ ডলার খরচে ট্যাবলেটে মডিফাই করে নিতে পারবেন। আর একেবারেই নতুন ম্যাকবুক ট্যাবলেট আকারে পাল্টে নিতে খরচ হবে সাড়ে ১৮০০ ডলার।
নোশন ইঙ্ক অ্যাডাম
নোশন ইঙ্ক অ্যাডাম ট্যাবলেটে ১৮০০ পিক্সেল হাই ডেফিনেশন ভিডিও সুবিধা থাকছে। এতে আছে ১০ ইঞ্চি মাপের পর্দা এবং ৩ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। থ্রিজি সংযোগসহ এটি চলবে অ্যান্ড্রয়েডভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেমে। এ বছরই বাজারে আসতে পারে নোশন ইঙ্ক অ্যাডাম। এটি কেনা যাবে ৩২৭ ডলার থেকে ৮০০ ডলারের মধ্যেই।
আসুস ই ট্যাবলেট
আসুসের ই-ট্যাবলেট নেটবুক এবং ট্যাবলেট দুই ভাবেই ব্যবহার করা যায়। এতে টাচস্ক্রিন ছাড়াও আছে কিবোর্ড সুবিধা। ১৬ গিগাবাইটের হার্ডড্রাইভ এবং ১৬ গিগাবাইটের এসডি কার্ড সাপোর্ট ছাড়াও ২০ গিগাবাইটের অনলাইন স্টোরেজ সুবিধা পাওয়া যাবে এতে। এটি ১ ইঞ্চি পুরু এবং স্ক্রিন ৮.৯ ইঞ্চির। এটি বিভিন্ন দিকে ঘোরানোও যায়। আসুসের ই-ট্যাবলেটের দাম ৪৫০ ডলার।
লেনোভো আইডিয়া প্যাড এস ১০-৩টি
লেনোভো আইডিয়া প্যাডে আছে শক্তিশালী হার্ডওয়্যার সুবিধা। এতে আছে ১০ ইঞ্চির টাচ স্ক্রিন পর্দা। ২৫০ গিগাবাইটের হার্ডড্রাইভ ছাড়াও আছে ট্রাডিশনাল কিবোর্ড যা পুরোপুরি সবদিকে ঘোরানো যায়। এটি নেটবুক এবং ট্যাবলেটের মাঝামাঝি মানের একটি পণ্য বলেই চিহ্নিত হয়েছে। এর দাম শুরু ৬০০ ডলার থেকে।
No comments:
Post a Comment